সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি
- আপডেট সময় : ০৭:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০২০
- / ১৫৪২ বার পড়া হয়েছে
করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে দেশে-বিদেশে ভয়াবহ প্রতারণা করা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতারণা ও অনিয়মের ঘটনায় সাহেদের অন্যতম সহযোগী তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে ঢাকার তেজগাঁও নাখালপাড়া থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আর প্রতারক সাহেদকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
চুক্তিভঙ্গ করে করোনা রোগীদের থেকে অতিরিক্ত বিল আদায়, ভুয়া প্রতিবেদন তৈরিসহ নানা অভিযোগে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কের রিজেন্ট হাসপাতালে গেল সোমবার অভিযান চালায় র্যাব।
এসময় অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম জানান, করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল। অথচ ২০১৪ সালের পর হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।এসব অভিযোগে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়ার পাশাপাশি আটক করা হয় আটজনকে।
পরদিন হাসপাতালটির মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব।হাসপাতালটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার। সরকার এই ব্যয় বহন করবে। কিন্তু তারা রোগীপ্রতি লক্ষাধিক টাকা বিল আদায় করেছে। পাশাপাশি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে এই মর্মে সরকারের কাছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বেশি বিল জমা দেয়। এসব অভিযোগে পরে মিরপুর শাখাও সিলগালা করে দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র সারওয়ার বিন কাশেম অভিযোগ করেন, হাসপাতাল ঘিরে বিভিন্ন অনিয়মের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে ছবি তুলে সেটি ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা করতো সাহেদ। তাকে গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টার কথাও জানান তিনি।
রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের পর সাহেদের প্রতারণার রোমহর্ষক সব ঘটনা সামনে আসতে থাকে। স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো সাহেদের জন্ম সাতক্ষীরায় মধ্যবিত্ত পরিবারে। অথচ অল্প সময়ের ব্যবধানে শত শত কোটি টাকার মালিক সে। যার প্রায় পুরোটাই প্রতারণা করে হাতানো। নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় ৮টিসহ রাজধানীতে মোট ৩২টি মামলা রয়েছে।
প্রতারণা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মাদ শহীদ। ভয়ঙ্কর প্রতারক সাহেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ থেকে পুলিশ সদর দফতরকে একটি চিঠিও দেয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো বঙ্গভবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব অনুষ্ঠানে ছিল সাহেদের সরব উপস্থিতি। গত ১০ বছর ধরে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ছবি উঠিয়ে ফেসবুকে দিয়ে নিজেকে জাহির করতেন। অংশ নিতেন বিভিন্ন টিভি টকশোতেও।
এরআগে সাবেক সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে ‘বিডি ক্লিক ওয়ান’ নামে একটি এমএলএম কোম্পানি খুলে ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর প্রতারণাই হয়ে ওঠে তার পেশা ও নেশা।