পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর দুই ছেলের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০১:৪৮:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০
- / ১৫৭৫ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রামের কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীতে কর্মরত পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর দুই ছেলের বিরুদ্ধেই রয়েছে জালিয়াতির অভিযোগ। একজন জাল সার্টিফিকেট দিয়ে আরেকজন অভিজ্ঞতা সনদ ছাড়াই সরকারের এই গুরুত্বপুর্ণ সেক্টরে চাকরি করছেন বছরের পর বছর ধরে। এমনকি পদন্নতিও পেয়েছেন কয়েকদফা। কর্ণফূলীর এমডি থাকা অবস্থায় নিজের সন্তানদের চেয়ার পাকাপোক্ত করতে একজনকে বরখাস্ত আর দুইজন কর্মকর্তাকে ডিমোশন দেয়ার মতো নজিরবিহিন ঘটনাও ঘটান আইয়ুব খান। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। এবিষয়ে কেজিডিসিএল বলছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
২০১০ সালের ১১ ডিসেম্বর বিভিন্ন পদে ২০ জনকে নিয়োগ দিতে ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্ণফূলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিশন কোম্পানী লিমিটেড কেজিডিসিএল। দাফতরিক কাজ শেষে ২০১১ সালের অক্টোবরে নিয়োগ সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ২০ জনের স্থলে নিয়োগ দেয়া হয় ৩৮ জনকে। …
তাদেরই একজন জ্বালানী খাতের মাফিয়া খ্যাত প্রেট্রোবাংলার পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর ছেলে মহিউদ্দিন চৌধুরী। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত বলছে, নুন্যতম অনার্স পাস ছাড়া কেউ আবেদনই করতে পারবেন না। অথচ একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়াকালীন সময়ে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে সহকারি ব্যবস্থাপকের পদটি বাগিয়ে নেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। বিতর্কিত ওই নিয়োগের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রয়েছে এমন জালিয়াতির অভিযোগ, বলছে দুদক।
নিয়োগের পরীক্ষাটি কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিলো, পরীক্ষায় কারা অংশ নিয়ে ছিলেন, লিখিত পরীক্ষার খাতাগুলো কোথায় এর কোন তথ্য নেই প্রতিষ্ঠানের কারো কাছে। এমনকি কর্ণফূলী ও পেট্রোবাংলার স্টোর খুঁজেও কোন কিছুর সন্ধান পায়নি দুদক। অভিযোগ রয়েছে ২০১৪ সালে আইয়ুব খান চৌধুরী কর্ণফূলীর এমডি হয়ে এসে গায়েব করে দিয়েছেন সবকিছু। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
আইয়ুব খানের আরেক ছেলে আশেক উল্লাহ চৌধুরী। সরাসরি উপ-ব্যবস্থাপক পদে যোগ দেন ২০১৫ সালে। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও ৫ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামুলক ছিলো। অথচ পিতার খুটির জোরে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন তিনি। আশেক উল্লাহর সিনিয়রিটি ধরে রাখতে ওই বছর ২৯ কর্মকর্তার নিয়মিত পদন্নতিও আটকে দেন আইয়ুব খান। ঘটনার প্রতিবাদ করায় একজনকে বরখাস্ত করাসহ ডিমোশন দেন আরো দুই কর্মকর্তাকে। কেজিডিসিএল বলছে, এসব বিষয়ে কোন অভিযোগ নেই কর্ণফূলীতে। তবে দুদকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিবেদন বা তথ্যপ্রমান পেলে চাকরিবিধি অনুযায়ী দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গেল ২০ আগষ্ট মধ্যরাতে বোর্ড বসিয়ে যে ৫৭ কর্মকর্তার নজিরবিহীন পদন্নতির ঘটনা ঘটেছে কেজিডিসিএলে। তার মধ্যে আইয়ুব খানের দুই ছেলে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আশেক উল্লাহ চৌধুরী দুইজনই রয়েছেন। মুলত এই দুই বিতর্কিত কর্মকর্তার জন্যই রাতের অন্ধকারে পদন্নতির সভাটি করতে হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।