পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবার
- আপডেট সময় : ০২:১০:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫২৯ বার পড়া হয়েছে
সর্ব মহলে আলোচিত পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরীর নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবার। চাকুরির সময় দাখিল করা তার এইচএসসি সনদের সঙ্গে রেজিষ্ট্রেশন নম্বরের গড়মিল পেয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এছাড়া চাকরির বিধিতে নির্ধারিত বয়সসীমা লঙ্ঘন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নের অভিযোগও রয়েছে শীর্ষ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগ পুঙ্খানুপঙ্খু রুপে যাচাই-বাচাই করছে। এদিকে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক, আইয়ুব খানের বেতন-ভাতা এবং এ পর্যন্ত তার পেছনে খরচ হওয়া রাষ্ট্রের সব অর্থ ফিরিয়ে নেয়াসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন। এ বিষয়ে আইয়ুব খানের বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযোগ যাচাইয়ের পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রের জ্বালানি খাতের সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান চৌধুরী নিয়োগ পান বিএনপি সরকারের প্রথম আমলে। জামায়াতের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিহ্নিত এই ব্যক্তি তৎকালীন সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের আস্থাভাজন হওয়ায় নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতির ধার ধারেননি।
১৯৯১ সালে বিএনপি’র মুখপত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকায় দেয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পেট্রোবাংলায় সহকারী ব্যবস্থাপক পদে তিনি নিয়োগ পান ১৯৯৪ সালে। অথচ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ছিলো ২৯ বছর ১ মাস ১১ দিন। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকুরিতে যোগদানের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল ২৭ বছর। একসঙ্গে যোগদান করা অন্য তিন কর্মকর্তার নিয়োগে বয়সসীমার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হয়নি আইয়ুব খানের বেলায়। এছাড়া ওই সময় ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের যে সার্টিফিকেট জমা দেন, তার সঙ্গে পড়ে রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মিল খুঁজে পায়নি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি তৎকালীন বিএনপি সরকার। সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসায় তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
বিএনপির পর এক-এগারোর সরকার হয়ে আওয়ামী লীগ আমলেও বিস্ময়করভাবে বছর বছর পদোন্নতি বাগিয়ে সহকারী ব্যবস্থাপক থেকে এখন তিনি পেট্রোবাংলার পরিচালক। (জিএফএক্স-১৩,১৪,১৫) বিভিন্ন মহলে তার পরিচিতি জ্বালানি খাতের মাফিয়া ডন হিসেবে। গুরুতর এসব অভিযোগের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবী করে দুর্নীতি বিরোধী সংগঠন-টিআইবি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান-সনাক বলছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে বেতন ভাতাসহ আইয়ুব খানের পেছনে ব্যয় হওয়া রাষ্ট্রের সমস্ত অর্থ ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। নইলে উৎসাহিত হবে দুর্নীতিবাজরা।
গুরুতর এই অভিযোগের ব্যাপারে আইয়ুব খানের বক্তব্য জানতে চাইলে সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করার পরামর্শ দেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে- পেট্রোবাংলার শীর্ষ পদে থাকার সুযোগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের দুই ছেলে-মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আশেক উল্লাহ চৌধুরীকেও অবৈধভাবে কর্ণফূলী গ্যাসে নিয়োগ দেন। মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতি আর আশেকউল্লাহর বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতা সনদ না থাকার অভিযোগও তদন্ত করছে দুদক।