ছাত্রলীগ নেতাদের দৌরাত্ম্যে অসহায় কলেজ কর্তৃপক্ষ
- আপডেট সময় : ০৭:০৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ১৫২৫ বার পড়া হয়েছে
২০১২ সালে ছাত্রলীগের কর্মীরা ঐতিহ্যবাহী এম সি কলেজ ছাত্রাবাসটি আগুনে পুড়িয়ে দিলে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী। তখন থেকেই ছাত্রাবাসটি দখলে নিয়ে নিজেদের অপরাধ ও অপকর্মের আশ্রয়স্থল বানিয়ে তোলে ছাত্রলীগ । ছাত্রাবাস উন্নয়নের অনুদান লোপাট থেকে শুরু করে ঘুরতে যাওয়া মানুষদের জিনিসপত্র ছিনতাই -অপদস্থ ও নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাতো আছেই। এর সবশেষ ফলাফল স্বামীকে আটকে গৃহবধূকে গণধর্ষণ।
সবুজ পাহাড়ের ক্যানভাসে ছাত্রাবাসের স্থাপত্যশৈলী ভূমিকম্প প্রবন এলাকা হবার কারনে আসাম বাংলোর আদলে তৈরি ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্রাবাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পদার্থ বিজ্ঞানী আতাউল করিম,বিখ্যাত ঐতিহাসিক নিহাররঞ্জন রায়,বরেন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ উপমহাদেশের বরেন্য ও বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব এই ছাত্রাবাসে আবাসিক ছাত্র হিসেবে থেকে জ্ঞান আহরন করে আলো ছড়িয়েছেন বিশ্বময়।
২০১২ সালে ঐতিহ্যের ধারক সেই কলেজ ছাত্রাবাসটি পুড়িয়ে দেয় এম সি কলেজ ছাত্রলীগ এর একটি গ্রুপ। যার আজো বিচার হয়নি প্রভাবশালী গ্রুপ নেতাদের দৌরাত্ম্যে। তখন থেকে ছাত্রাবাসে অবস্থান নিয়ে ছাত্রলীগের কিছু কর্মীরা শুরু করে সীমাহীন লুন্ঠন। গৃহবধু ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সাইফুর ছাত্রাবাসের কক্ষ ছাড়াও দখল করেছিলো ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরে থাকা তত্ত্বাবধায়কের বাসাটিও। খাবারের বিল না দেয়া,ছাত্রাবাস উন্নয়নে কলেজ প্রদত্ত অনুদান নিজের পকেটে নেয়ার মত শত অভিযোগ চোখের সামনে দেখলেও তাদের ভয়ে এতোদিন মুখ খুলেননি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ সহ সিনিয়র নেতারাও নিরুপায় তাদের কাছে।
প্রভাবশালী নেতার শক্তির বদৌলতে কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়মিত ছাত্রীদের উত্যক্ত করার শত অভিযোগ রয়েছে সাইফুর,রনি,অর্জুনসহ অনেক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এক অজানা কারনে নীরব ছিলো কলেজ প্রশাসন।সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টিতে সরাসরি আঙুল তুলছেন কলেজ অধ্যক্ষের দিকে।কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের নারী উত্তোক্ত্য করার বিষয়ে কলেজে আলাদা কমিটি থাকলেও কেউ কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেনি।
সাইফুরসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হোস্টেলের অনান্য শিক্ষার্থীদের নানান অভিযোগ ও তার ব্যবহৃত বাংলোর ব্যপারে কলেজ অধ্যক্ষ দোষ চাপান হোস্টেল সুপারের উপর, বাদ দেননি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও। অবশেষে তার অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করলেন অধ্যক্ষ।
কলেজ ছাত্রলীগের নানা অপকর্মের শক্তিদাতা ও পেছনের কারিগরদের পরিচয় সামনে এনে বিচার হবে গৃহবধূ ধর্ষণের,কলঙ্কমুক্ত হবে দেশের প্রাচীনতম এই প্রতিষ্ঠান এবং ছাত্র সংগঠনটির। এমন দাবি ছাত্রলীগ নেতা- কর্মীদের।