এসএ অ্যাগ্রো ফিডসের জমি হাতিয়ে নিতে রংপুর ভূমি অফিসের সিন্ডিকেটের ফাঁদ
- আপডেট সময় : ০৬:১২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
- / ১৭৪১ বার পড়া হয়েছে
রংপুরে এসএ অ্যাগ্রো ফিডসের জমি হাতিয়ে নিতে ভয়ংকর ফাঁদ পেতেছে ভূমি অফিসেরই একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কোম্পানির মালিকানাধীন জমি খাস বানানোর অপচেষ্টায় মরিয়া তারা। এসএ অ্যাগ্রো ফিডস কর্তৃপক্ষের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা না পেয়ে অডিট আপত্তির নামে ভুয়া প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তবে এ সিন্ডিকেটের মুখোশ উন্মোচনে জমির মালিকানা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করেছে এসএ অ্যাগ্রো ফিডস কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মিঠাপুকুর উপজেলার জানকিনাথপুর মৌজায় গড়ে উঠেছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে
আধুনিক এসএ অ্যাগ্রো ফিডস লিমিটেড। এসএ গ্রুপ অব কোম্পানীজের মালিকানাধীন এই ফিড মিলটি ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে
দেশব্যাপী।
সিএস রেকর্ডমুলে ব্যক্তি মালিকানাধীন নিষ্কণ্টক এই জমি কয়েক হাত বদলের পর সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছ থেকে ২০০৯ সালে কিনে নেন এসএ গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহউদ্দিন আহমেদ। যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাঁর নামেই খাজনা-খারিজও সম্পন্ন হয়ে আসছে এতোদিন ধরে। সব কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে ২০১৭ সালে ফিড মিল স্থাপনের জন্য কোম্পানির নামে হস্তান্তরের অনুমতি দেয় রংপুর জেলা প্রশাসন।
এরপর হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠে বিশাল এই ফিড মিলটি। যার ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে রংপুর রাজস্ব বিভাগের হিসাব
তত্ত্বাবধায়ক আমজাদ হোসেন ও ভূমি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা মোজাহিদ হোসেনের। ভূমি অডিটের নামে ভয়ংকর এক ফাঁদ পাতে আমজাদ-মোজাহিদ সিন্ডিকেট। সিএস রেকর্ডমূলে ব্যক্তি মালিকানায় থাকা এই জমি তারা এসএ খতিয়ানে খাস হিসেবে দেখাতে ২০২১ সালের ২৭ মে এক চিঠিতে এসএ ফিডের ওই জমির নাম খারিজ বাতিলে খসড়া আপত্তি দাখিল করেন আমজাদ হোসেন। তড়িঘড়ি করে অভিন্ন প্রতিবেদন দাখিল করেন জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তৎকালীন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোজাহিদ হোসেনও।
কিন্তু সিএস এবং আরএস রেকর্ডের প্রিন্ট পর্চায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি কী মূলে খাস খতিয়ানে দেখানো হলো- তার কোনো
কাগজপত্র জায়গীরহাট ভূমি অফিসে। কিন্তু আমজাদ অনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের উদ্দেশে এসএ ফিডে জমির বিরুদ্ধে এ ধরনের
আপত্তি দাখিল করেছেন বলে জানান জায়গীরহাট ভূমি অফিসের কর্মকর্তা বকুল মিয়া।
এই জমি কেনাবেচার সাথে জড়িত প্রবীণ জাতীয় পার্টি নেতা মোসলেম উদ্দিনও জানিয়েছেন, সকল কাগজপত্র যাচাই করেই দলিল রেজিস্ট্রি করেছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। কাজেই কোনোভাবেই তা খাস খতিয়ানে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
আমজাদ-মোজাহিদ সিন্ডিকেটের ভুয়া প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে রংপুর জজ কোর্টে মামলা করে এসএ অ্যাগ্রো ফিডস কর্তৃপক্ষ।
আইন-কানুনকে পাশ কাটিয়ে ভুয়া অডিট আপত্তির নামে এসএ ফিডের জমি জবর দখলের অপচেষ্টা করছে একটি সিন্ডিকেট।
তবে আদালতে বার বার সময় চেয়েও খাস খতিয়ানের পক্ষে কোন প্রমাণপত্র হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। যা অকপটে স্বীকারও
করলেন সরকারপক্ষের আইনজীবী।