করোনায় বাজার সংকুচিত হওয়ায় বিপাকে লিচুচাষী ও ব্যবসায়ীরা
- আপডেট সময় : ০৯:১১:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুন ২০২০
- / ১৫৫৯ বার পড়া হয়েছে
করোনা পরিস্থিতিতে বাজার সংকুচিত হওয়ায় এবার লিচুর বাম্পার ফলন নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন জেলার লিচুচাষী ও ব্যবসায়ীরা। ফলে চলতি মৌসুমে বিপুল লোকসানে পড়েছেন তারা। দিনাজপুরের বাজারে লিচু উঠতে শুরু করলেও চাহিদার অভাবে জাতভেদে প্রতি হাজারে দাম কমেছে ২শ’ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকা পর্যন্ত। এদিকে, পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে করোনা পরিস্থিতির কারণে সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যদাম পাচ্ছেন না লিচু চাষীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার প্রায় ১৫ কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হলেও করোনা পরিস্থিতিতে দূরের পাইকাররা আসতে না পারায় কাঙ্খিত মূল্য বঞ্চিত চাষী ও ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় ঋণ মওকুফসহ প্রণোদনা চান লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
প্রতি মৌসুমে দিনাজপুর জেলায় হাজার কোটি টাকার প্রায় ৭০/৮০ হাজার টন লিচু উৎপন্ন হয়। যার ৭০ শতাংশই আসে বিরল উপজেলা থেকে। উত্তরাঞ্চলের সবচে’ বড় এই লিচু বাজারে প্রতিদিন ভ্যান, ইজিবাইক ও মিনি ট্রাকে চাষীরা নিয়ে আসছেন লিচু। করোনা পরিস্থিতিতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে এবার বাজার বসছে গোর-ই-শহীদ বড়মাঠে। কিন্তু লিচু বাজারের কলেবর বাড়লেও করোনার কারণে নেই তেমন কোলাহল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেপারীরা আসতে না পারায় কমে গেছে লিচুর দাম।
প্রতিদিনই দাম পড়তে থাকায় হতাশ লিচু চাষীরা। সেই সাথে ঝড়বৃষ্টি আরও ভাবিয়ে তুলেছে তাদের।
তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সারাদেশে লিচু সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে নেয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। আগামীতে ব্যাপারীর সংখ্যা বাড়লে লিচুর দামও কিছুটা বাড়বে।
এদিকে, পাহাড়ের উর্বর উঁচু জমি লিচু চাষের উপযোগী হওয়ায় রাঙামাটি জেলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষের পরিধি বেড়ে সৃষ্টি হয়েছে অনেক নতুন উদ্যোক্তা। কিন্তু সাড়ে ১৭ হাজার টন উৎপাদন নিয়ে এ বছর লিচুর ফলন ভালো হলেও করোনার কারণে পরিবহণ সংকটে সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষী ও ব্যবসায়ীরা। আগাম দামে অনেকে লিচু বাগান কিনে এখন ন্যায্যদাম না পেয়ে লোকসানে পড়েছেন।
করোনাভাইরাস লিচু বাজারজাতে কিছুটা সংকট তৈরী করলেও শেষ পর্যন্ত কৃষকরা সন্তোষজনক মূল্য পাবে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী কসবা, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমিতে এবার লিচুর উৎপাদন হয়েছে দেড় হাজার টন। বাজারে প্রতি হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা। অন্য জেলার পাইকাররা না আসায় এবার কাঙ্খিত মূল্য পাচ্ছেন না বাগান মালিকরা।
কৃষি বিভাগের হিসেবে ছোট-বড় মিলিয়ে জেলার ৪২০টি বাগানে এবার প্রায় ১৪/১৫ কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হয়েছে।
করোনাকালীন সময়ে বাম্পার ফলনে দেশের ফল-ফলাদি উৎপাদনে ভোক্তারা সুফল পেলেও কপাল পুড়েছে কৃষকের। তাই তারা ঋণ মওকুফসহ চান উপযুক্ত প্রণোদনা।