গেমিং ইন্ডাস্ট্রিটা অনেক বড় হয়েছে : আনাস খান
- আপডেট সময় : ০৬:২৪:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ১৬০৭ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ডেস্ক : খাজা মো. আনাস খান। বর্তমানে তিনি গিগাবাইট বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড হিসাবে কর্মরত আছেন। তার হাত ধরে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে দেশের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্টের কাজ করে আসছে যৌথভাবে স্মার্ট টেকনোলজি ও গিগাবাইট বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাজারে যারা স্বল্প খরচে গুনগত মানের পণ্য কেনার কথা চিন্তা করেন তাদের জন্য ‘গিগাবাইট’ বলে জানান আনাস খান।
দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে দেশের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্টে কাজ করছেন। ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা কেমন জানতে চাইলে আনাস খান বলেন, দেখুন, যেকোনো ইন্ডাস্ট্রির গোড়াপত্তন করতে অনেক লড়াই করতে হয়। কাস্টমারদের সাথে একপ্রকার যুদ্ধই করতে হয়। কাস্টমারকে বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টের সাথে পরিচয় করানো, এর ভালো-মন্দ বোঝানো, প্রচার-প্রচারণা করা অনেক কঠিন কাজ।
২০০০ সালের শুরুতে এই কাজটাই করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। সারথি হিসেবে পাই দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য পরিবেশক ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডকে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে টেকনিক্যালি স্কুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গেমিং বিষয়ে প্রোগ্রাম, সেমিনার, কর্মশালা, প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও গেমিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।
এখন আামদের গেমাররা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গেমিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কারও অর্জন করছেন। ১৮ বছরে এই গেমিং ইন্ডাস্ট্রিটা অনেক বড় হয়েছে। দেশে এখন গেমিংয়ের একটা ভালো অবস্থান তৈরি হয়েছে। আগে বাবা-মায়েরা গেমিং বিষয়টা তেমনভাবে বুঝতেন না। এখন বোঝেন। বাবা-মায়েরা তাদের ছেলে-মেয়েদের গেমিংয়ের প্রতি উৎসাহ দিচ্ছেন। লাখ লাখ টাকা খরচ করে গেমিং একসেসরিজ কিনে দিচ্ছেন। তরুণরাও এই গেমিংকে এনজয় করছেন। ইতোমধ্যে দেশে অসংখ্য মেধাবী আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গেমার তৈরি হয়েছে। দিন দিন গেমিং ইন্ডাস্ট্রিটা এগিয়ে যাচ্ছে।
গিগাবাইটের যেকোনো পণ্য কেনার আগে অবশ্যই স্মার্ট ওয়্যারেন্টি স্টিকার দেখে ক্রয় করার অনুরোধ করেন আনাস খান। তিনি বলেন, বাজার থেকে গিগাবাইটের রিফার্বিশ প্রোডাক্ট কিনে অসংখ্য ক্রেতারা প্রতারিত হয়েছেন। যখন প্রোডাক্টের কোন ক্রটি দেখা দিচ্ছে, তখন ছুটে আসছেন অফিসিয়াল ডিলারদের কাছে। আর যখন বিক্রয়োত্তর সেবা চাচ্ছেন, তখন গিগাবাইটের একমাত্র পরিবেশক স্মার্ট টেকনোলজিস পড়ছে চরম বিপাকে।
এই ধরনের মাদারবোর্ড ও গ্রাফিক্স কার্ড কিনে প্রতারণার শিকার হওয়া ক্রেতার সংখ্যা প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ। দেশের একমাত্র পরিবেশক হওয়ায় এসব পণ্য নষ্ট হলে বিক্রয়োত্তর সেবার দায় না থাকায় গ্রাহকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হচ্ছে স্মার্ট টেকনোলজিসকে। বিষয়টি আমলে নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের পরিবেশিত পণ্যে হলোগ্রাম যুক্ত স্টিকার ব্যবস্থা চালু করেছি। তাই, আমি ব্যবহারকারী ও ক্রেতাদের অনুরোধ করে বলতে চাই, আপনারা গিগাবাইটের যেকোনো পণ্য কেনার আগে অবশ্যই স্মার্ট ওয়ারেন্টি স্টিকার দেখে ক্রয় করুন।
বর্তমানে গিগাবাইট বাংলাদেশ কী ধরনের পণ্য বাজারজাত করছে? জানতে চাইলে আনাস খান বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন গিগাবাইটের পণ্য বলতে সবাই শুধু মাদারবোর্ড আর গ্রাফিকস কার্ডকে চিনতেন। কিন্তু বর্তমানে গিগাবাইটের মনিটর, র্যাম, এসএসডি, কেসিং, পাওয়ার সাপ্লাই, কুলার, মাউস, কিবোর্ড বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া, গেমার ও প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য শক্তিশালী ল্যাপটপ তো আছেই। এছাড়াও ইন্টেলের নতুন প্রজন্মের প্রসেসরগুলোর কার্যকারিতা সঠিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে গিগাবাইট তাদের ইন্টেল ৬০০ সিরিজের মাদারবোর্ডের বায়োস হালনাগাদ করেছে। ফলে বাজারে আসতে যাওয়া নতুন প্রজন্মের ইন্টেল প্রসেসরে মাদারবোর্ডগুলো স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা যাবে।
গিগাবাইট প্রোডাক্টের বিশেষত্ব কী? জানতে চাইলে আনাস খান বলেন, তাইওয়ানের বিশ্ব নন্দিত ব্র্যান্ড গিগাবাইটের সব ধরনের প্রোডাক্টের দেশে একমাত্র অফিসিয়াল পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লি.। স্মার্টের সঙ্গে গিগাবাইটের পথচলা প্রায় ১৮ বছরের। আমরা গিগাবাইটের ব্যবসার শুরু থেকেই তাইওয়ানের সাথে অফিসিয়ালি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশে গেমিং প্রোডাক্ট আমদানি করছি। সরকারকে নির্ধারিত ভ্যাট, ট্যাক্স দিচ্ছি।
ক্রেতারা পণ্য কিনলে ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা দিচ্ছি। যেকোনো প্রোডাক্টের সমস্যায় অফিসিয়ালি সমাধান করছি। যদিও সাধারণত প্রোডাক্টের তেমন কোন সমস্যা দেখা যায় না। দেশের গেমিং ইন্ডাস্ট্রির শুরু থেকেই আমরা ক্রেতাদের অর্জিনাল প্রোডাক্ট দিয়ে আসছি। সারাদেশে স্মার্ট টেকনোলজিসের শোরুমগুলিতে গিগাবাইটের যেসব প্রোডাক্ট রয়েছে, সেগুলি কখনই রিফার্বিশ বা নকল নয়।
গিগাবাইট মানের প্রশ্নে কোন আপোস করে না। ইতোমধ্যে ক্রেতাদের আন্তরিক সহযোগিতা ও ভালোবাসায় আমরা সারাদেশে আইটি পেরিফেরাল মার্কেটে একটা বড় মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি, এখন ক্রেতারা অনেক বিচক্ষণ ও সচেতন। কোন প্রোডাক্টটা আসল, আর কোনটা নকল সেটা তারা বুঝতে পারেন।