গড়ে কেবল লাখ টাকা খরচ করলেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট মিলছে রোহিঙ্গাদের
- আপডেট সময় : ০১:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ১৫৩৪ বার পড়া হয়েছে
গড়ে কেবল লাখ টাকা খরচ করলেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট মিলছে রোহিঙ্গাদের৷ তাদের সহায়তা করছে বাংলাদেশেরই দালাল চক্র৷ এখন সফটওয়্যারের সঙ্গে ইন্টারভিউ মিলিয়ে রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করার কাজ করছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
রিভান, ওমর এবং জাফর– সৌদি আরবের জেদ্দায়, বাংলাদেশ কনসুলেটে ৭ বছরের কম বয়সী এই তিন শিশুর জন্য আবেদন করা হয় বাংলাদেশী পাসপোর্টের। তবে অভিযোগ- তারা কেউই বাংলাদেশী নাগরিক নয়। আবেদনের কপিতে দেখা যায় বাবা-মায়ের স্থায়ী ঠিকানা আর সন্তানের স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন। স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এমন কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব সেখানে কখনো ছিল না। যদিও কনসুলেট সেই আবেদনের কপি যাচাই-বাচাই শেষে গ্রহণও করেছে। আবার ৩১ জানুয়ারীর আবেদনের কপির সাথে সংযুক্ত জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটও জেদ্দা থেকে একই তারিখে ইস্যু করা।
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি ঠেকাতে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আবেদনকারীদের বিষয়ে বিশেষ যাচাই-বাছাই করার কথা জানানো হয় সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে। এরপর থেকেই রোহিঙ্গারা চট্টগ্রাম বাদ দিয়ে অন্য অঞ্চলের নাম উল্লেখ করে আবেদন করছে।
এসএটিভির অনুসন্ধান শুরু হয় তাদের প্রকৃত পরিচয় উদ্ধারের। তাদের পাসপোর্ট বাংলাদেশী হলেও সৌদি আরবে কাজের অনুমতিপত্র বা আকামায় দেখা যায় সন্তানদের বাবা-মা বার্মিজ তথা রোহিঙ্গা নাগরিক। আবেদনের কপিতে দেয়া মোবাইল ফোন নাম্বারে কল দিয়ে দেখা যায় নাম্বারটি বর্তমানে আর ব্যবহার হচ্ছে না। এমনকি স্থায়ী ঠিকানায় গিয়েও তাদের অথবা পূর্ব-পুরুষের অস্তিত্ব মেলেনি।
শুধু বিদেশে নয়, দেশেও একটি অসাধু চক্র রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে সহায়তা করছে। ঢাকার উত্তরার একটি দোকানের মাধ্যমে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে সহজেই। দোকানটি শুধু পাসপোর্ট ফর্মই পূরণ করে না, পুরোদস্তুর যেন একটি মিনি পাসপোর্ট অফিস। প্রতিদিন শত শত লোক ভিড় করে সেখানে। সরকারীভাবে ৭ দিনের জরুরী পাসপোর্ট তারা দেয় মাত্র ৩ দিনে।
গোপন ক্যমেরায় ধরা পড়লেও এসএ টিভির ক্যামেরার সামনে কথা বলতে নারাজ দোকানের মালিক মুরাদ হোসেন। তার দাবী- জন্ম নিবন্ধন কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে পাসপোর্ট পেতে বাধা নেই। দেড় থেকে দুই লাখ টাকার চুক্তিতে তারা একেকটি পাসপোর্ট বের করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এটি দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।