ডাক্তার, হাসপাতাল, রোগী-কে কার কাছে জিম্মি?
- আপডেট সময় : ০৫:০৬:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০২৩
- / ১৬১৯ বার পড়া হয়েছে
চিকিৎসকেরা ধর্মঘটে গিয়েছিলেন। এমন ধর্মঘট আমাদের কাছে নতুন নয়। কমবেশি সকল পেশার লোকেরাই ধর্মঘটে যান। তারা যা চান, তা পান না বলে, সেটা আদায়ের জন্য ধর্মঘট করেন।
ধর্মঘট মানে-তার পেশাগত কাজকর্ম সব বন্ধ করে দেওয়া৷ সেটা হতেই পারে৷ আমার ইচ্ছা, আমি কাজ করব না, এটা আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা৷ কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা স্বাধীনতা যখন অন্য অনেকের জীবন-মরণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন কি সেটা আর নৈতিকতার বিচারে উত্তীর্ণ হয়?
আমাদের দেশে আমরা সবচেয়ে বেশি ধর্মঘট দেখেছি পরিবহণ সেক্টরে৷ সামান্য কিছু হলেই গাড়ি বন্ধ করে দেয়৷ সংখ্যায় এরা অনেক, এদের নেতৃত্বেও রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ৷ ফলে তাদের ধর্মঘট খুবই কার্যকর হয়৷ ধর্মঘট করে বা হুমকি দিয়ে এরা বৈধ আইনের বাস্তবায়ন পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে পারে৷ সড়ক পরিবহণ বিষয়ক এরকম একটা আইন জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পরও এদের কারণে এখন পর্যন্ত কার্যকর হতে পারছে না৷
আর যখন ছাত্র ছিলাম, সেই এরশাদের শাসনামলে, প্রায়ই দেখতাম ছাত্র ধর্মঘট৷ হয়তো পরীক্ষা দিতে গেছি, কলাভবনের দরজায় কেউ একজন একটা ধর্মঘটের নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে৷ হয়ে যেত ধর্মঘট৷ পরীক্ষা দিতে হত না৷ প্রথম প্রথম খুশিই হতাম৷ কিন্তু পরে যখন দেখতাম এভাবে জমে জমে পুরানো নতুন মিলিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে, তখন ধর্মঘটের নাম শুনলেই আতঙ্কগ্রস্ত হতাম৷
তারপরও পরীক্ষা না হয় পরে দেওয়া যায়, কিন্তু চিকিৎসা? চিকিৎসা তো সময়েরটা সময়েই করতে হয়৷ না করলে মৃত্যু অবধারিত৷ হয়তো সে কারণেই চিকিৎসক ধর্মঘটকে বিবেচনা করা হয় সবচেয়ে সংবেদনশীল বিষয় হিসাবে৷ সংবেদনশীল হওয়ার পরও এমন ধর্মঘটের মুখোমুখি কিন্তু আমাদেরকে প্রায়ই হতে হচ্ছে৷ সবশেষ, গত ১৭ ও ১৮ জুলাই দেশজুড়ে চিকিৎসকদের একটা ধর্মঘট হয়ে গেল৷ অবশ্য এই ধর্মঘট সরকারি হাসপাতালে হয়নি, হয়েছে কেবল বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে৷ ডাক্তাররা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যে চেম্বার করেন, সেখানে বসেননি৷ এই হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোনো ধরনের অপারেশন করেননি৷ প্রথমত শুনে হয়তো মনে হবে, যাক সকল হাসপাতালে তো ধর্মঘট হচ্ছে না, সরকারি হাসপাতালে ডাক্তাররা বসছেন৷ কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে বর্তমানে চিকিৎসা সেবার সিংহভাগই হয় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়৷ নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও বেসরকারি পর্যায়ে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ভিজিট দিয়ে চিকিৎসা নেওয়াটাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেন৷ ফলে, বেসরকারি পর্যায়ে যখন এমন ধর্মঘট শুরু হলো, সারাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সেটা এক ভয়াবহ দুর্ভোগ হিসাবেই আবির্ভূত হলো৷ মানুষ দূর দূরান্ত থেকে রোগী নিয়ে এসে দেখেন ডাক্তার আজ চেম্বার করবেন না! অনেক জনপ্রিয় চিকিৎসক আছেন, যাদেরকে দেখাতে এক দুই সপ্তাহ আগেই সিরিয়াল নিতে হয়৷ অনেকে সেরকম সিরিয়াল নিয়ে এসে জানতে পারলেন ডাক্তার বসছেন না৷ হতাশ হয়েছেন তারা৷ সেই সঙ্গে বিপদে পড়ে গেছেন, আবার নতুন করে সিরিয়াল নিতে হবে শুনে৷ অনেকের হয়তো অপারেশনের ডেট ছিল, সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে৷
এসবের কোনো কিছুকেই পেশাদারত্ব বলা যায় না৷ ধর্মঘটে যাবেন ভালো কথা, আপনার রোগীদের বিষয়টা আগেভাগেই জানিয়ে দিতে পারতেন৷ যাদের জরুরি সমস্যা, তাদের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে পারতেন৷ কিন্তু তারা সে পথে যাননি, হয়তো সে পথে যে যাওয়া দরকার, তা চিন্তারও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেননি৷ দুর্ভাগ্য আমাদের, গুরুত্বপূর্ণ এই সেক্টরটিতে আসলে এখনো পেশাদারত্বই তৈরি হয়নি৷ তারা মনে করেছেন, আমাদের একটা দাবি আছে, সেটা সহজভাবে আদায় করা যাচ্ছে না, চূড়ান্ত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে৷ আর তাই ধর্মঘট৷
তাদের এমন চিন্তা যে ভুল ছিল না, তা দ্রুতই প্রমাণ হয়েছে৷ ধর্মঘটের কারণে তাদের দাবি পূরণ হয়েছে৷ কিভাবে কী হলো সে বিশ্লেষণে যাওয়ার আগে বরং একটু বলে নেওয়া দরকার দাবিটা কী ছিল তাদের৷ দাবি ছিল গ্রেপ্তার হওয়া ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা-এই দুই ডাক্তারের মুক্তি৷ দুই ডাক্তারকে গ্রেপ্তার কেন করা হয়েছিল? তাহলে ঘটনাটা বলা দরকার৷ গত ৯ জুন কুমিল্লার গৃহবধূ মাহবুবা রহমান আঁখি রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হন সন্তান প্রসবের প্রত্যাশায়৷ তিনি চেয়েছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি হতে৷ ডা. সংযুক্তা সাহা তখন দেশে ছিলেন না৷ অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি রোগী ও তার আত্মীয় স্বজনের কাছে গোপন রেখে তাকে ডা. সংযুক্তা সাহার ইউনিটেই ভর্তি করেন৷ আঁখি ও তার স্বজনেরা চেয়েছিলেন যেন নরমাল ডেলিভারি হয়৷ কিন্তু সহযোগী চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আঁখির সন্তান প্রসব করান৷ অপারেশনের পরদিন নবজাতকটি মারা যায়৷ কদিন পর, ১৮ জুন আঁখিও মারা যান৷ এঘটনায় রোগীর আত্মীয়স্বজন স্বাভাবিকভাবেই মর্মাহত হন, ক্ষুব্ধ হন৷ তারা সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিকার না পেয়ে শরণাপন্ন হন মিডিয়ার৷ বিষয়টি মিডিয়াতে প্রচার হওয়ার পর যেন টনক নড়ে সকলের৷ এনিয়ে মামলাও হয়৷ পুলিশ হাসপাতালে যায়৷ সহযোগী চিকিৎসক হিসাবে থাকা দুইজন ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেফতার করে৷ এই দুই ডাক্তারের মুক্তির দাবিতেই ধর্মঘট৷ আর ধর্মঘটের ফলও মিলেছে, দ্বিতীয় দিনেই তাদের জামিন হয়ে গেছে৷
এই ঘটনা থেকে আমার মনে বেশ কয়েকটা প্রশ্ন জেগেছে৷ যে চিকিৎসক, ডা. সংযুক্তা সাহা, দেশেই নেই তার অধীনে রোগীকে ভর্তি করাটা কি হাসপাতাল কতৃপক্ষের ঠিক হয়েছিল? তাদের এমন কাজ কি প্রতারণা ও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না? অপারেশন যখন হয়, রোগী ও আত্মীয় স্বজনকে কি জানানো হয়েছিল যে-ডা. সংযুক্তা সাহা নয়, অপারেশন করছেন তার সহযোগীরা? বিষয়টি মিডিয়া পর্যন্ত গড়ানোর আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিলেন না? যে দুই সহযোগী চিকিৎসক অপারেশন করেছিলেন তারা কি জানতেন না যে, তারা ডা. সংযুক্তা সাহার নামেই অপারেশন করছেন? নবজাতক ও প্রসূতির যে মৃত্যু হয়েছিল সেখানে কি চিকিৎসা সেবার কিছুমাত্র ভুল বা অদক্ষতা কাজ করেনি? যদি ভুল বা অদক্ষতা কাজ করে থাকে, তাহলে সেজন্য কি এই দুই সহযোগী চিকিৎসককে অভিযুক্ত হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না? এধরনের মামলা কি জামিন অযোগ্য? অর্থাৎ আসামীকে জামিন দেওয়াটা কি আইনের বড় ধরনের ব্যত্যয়? প্রত্যাশা অনুযায়ী জামিন না পেলে উচ্চতর আদালতে যাওয়া যায়, সে চেষ্টা কি ধর্মঘট আহ্বানকারীরা করেছিলেন? এভাবে ধর্মঘট ডেকে কি চিকিৎসকেরা আইনের স্বাভাবিক গতিকে বাধাগ্রস্থ করলেন না? যে সংগঠনগুলো এই ধর্মঘট আহ্বান করেছিল এবং সমর্থন করেছিল, সেগুলোর কমপক্ষে দুটির সভাপতি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক৷ সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কি তারা এধরনের ধর্মঘট আহ্বান বা সমর্থন করতে পারেন? এক্ষেত্রে তারা কার প্রতিনিধিত্ব করেছেন-ডাক্তারদের নাকি জনগণের?
এই যে প্রশ্নগুলো করলাম, এসবের উত্তর কিন্তু খুব কঠিন নয়৷ সবাই জানেন৷ কিন্তু সেই জবাবগুলো কেউই উচ্চারণ করতে চান না৷ আমাদের সমাজের, দেশের মূল সমস্যাটা এখানেই৷ প্রশ্নগুলো বারবার উচ্চারিত হলে, জবাবগুলো নিয়ে আলোচনা হলে, সমস্যা কিন্তু এমনিতেই অনেকটা কমে যায়৷
এতসব প্রশ্নের বাইরে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে৷ এঘটনায় ডাক্তাররা বারবার বলেছেন মিডিয়া ট্রায়ালের কথা৷ বলেছেন, কিছু একটা হলেই লোকজন যে মিডিয়ার কাছে ছুটে যায়, মিডিয়া সেসব প্রচার করে চিকিৎসকদের সামাজিকভাবে হেয় করে, এটা ঠিক না৷ চিকিৎসকদের এমন অভিযোগকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-মানুষ তো তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এটাও দেখেছে যে, মিডিয়ায় প্রকাশিত না হলে প্রতিকারও হয় না৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে কী করে তারা? কী করতে পারে? এইসব বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ার আছে? কিংবা তারা কি রোগীর পক্ষ নিয়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে চায়? এই যে এবারের ঘটনা, ডাক্তাররা ধর্মঘট করে প্রমাণ করে দিল-তারা সরকারকেও নতজানু করাতে পারে৷ এরপর কি বেসরকারি হাসপাতালগুলো ডাক্তারদের আরও বেশি সমীহ করবে না? বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলো আসলে ডাক্তারদের কাছে একধরনের জিম্মি হয়ে আছে৷ ডাক্তাররা চাইলে একটা হাসপাতালকে ওঠাতেও পারে, আবার ডুবাতেও পারে৷ আলোচিত ঘটনায়, সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলেই কি সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের বিরুদ্ধে, এমনকি তাদের হাসপাতালের ভর্তির সঙ্গে জড়িত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন? ফলে তারা কি এই ঘটনায় দায় এড়াতে পারেন? কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, দুজন ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাউকে কিন্তু আটক করা হয়নি৷ নাকি হাসপাতাল মালিকানার সঙ্গে ধনবান ব্যক্তিরা জড়িত বলে তারা ছাড় পেয়ে গেছেন?
শেষ যে প্রশ্নটি করতে চাই, যে প্রশ্নটি আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে হয়, সেটা হলো-চিকিৎসায় ভুল হলে ক্ষতিগ্রস্ত রোগী প্রতিকার পাবে কিভাবে? সত্যি কথা বলতে কী, আমাদের দেশে এর কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই৷ চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, চিকিৎসায় ভুল হলো কী হলো না, সেটা বিচারের ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র আর একজন সিনিয়র চিকিৎসকেরই৷ কিন্তু সেই সিনিয়র চিকিৎসক কে বা কারা হবেন? জুনিয়র সিনিয়র সকলের স্বার্থ যদি একজায়গায় কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়, তখন বিচারের বাণী তো নিরবেই কাঁদবে৷ কোনো বিচারক কি তার নিজের সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের বিচার পক্ষপাতহীনভাবে করতে পারবেন? আলোচিত সবশেষ এই ঘটনাতেই তো দেখলাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সরকারের সর্বোচ্চ দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ দুই ব্যক্তির একজন সোসাইটি অব সার্জনসের প্রেসিডেন্ট, অপরজন সোসাইটি অব মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট৷ ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বলে একটা কথা আছে৷ এই দুই ব্যক্তি কি বিষয়টি বোঝেন? এবার এই ধর্মঘটটি ডেকেছিল গাইনি চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্ট্রেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি)৷ এই আহ্বানের পর ডাক্তারদের ৩৬টি সংগঠন এতে সমর্থন দেয়৷ সমর্থন দেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে দুই মহাপরিচালকের নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোও রয়েছে৷ তাহলে হলোটা কি? বিচারটা কে করবে?
বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, ডাক্তারদের চিকিৎসা নিয়ে আপত্তি উত্থাপিত হলে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়৷ সেই অভিযোগ বিচারের দায়িত্বে যারা থাকেন, তারা হয়তো অভিযুক্তেরই সিনিয়র কেউ৷ ফলে বিচারের রায় অবধারিতভাবে চিকিৎসকের পক্ষেই চলে যায়৷ এই যে দুই মহাপরিচালকের কথা বললাম, তাদের সংগঠনের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ আসে, তারা কি বিচার করবেন? সুবিচার প্রত্যাশা করা যাবে? বিচারের রায় সংগঠনের সদস্যের বিরুদ্ধে গেলে, প্রেসিডেন্টের চেয়ারে তিনি আর থাকতে পারবেন? অথবা অন্যভাবে বলা যায়, তাকে প্রেসিডেন্ট তো বানানোই হয়েছে প্রটেকশন পাওয়ার লক্ষ্যে৷
অথচ, বিদেশে কিন্তু চিকিৎসার গাফিলতি হলে সুবিচার পাওয়া যায়৷ তারা কিভাবে পায়? পায় একারণে যে ওখানে নিয়মটা নিয়মের মতো করে চলে৷ আইনের স্বাভাবিক গতিপথে কোনো ক্ষমতাধর প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে না৷ চিকিৎসক ও রোগীর মাঝখানে রোগীর পক্ষ হয়ে শক্তিশালী অবস্থানে থাকে বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো৷ ফলে পক্ষপাতমূলক কোনো সিদ্ধান্ত সাধারণত দেখা যায় না৷
এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে অগ্রসর হলে হয়তো আমাদের এখানেও একটা সুব্যবস্থা কায়েম করা সম্ভব হবে৷ নয়তো হয়তো এমন দিনও আসতে পারে যখন দেখা যাবে, অপারেশনের মাঝপথে সার্জন কাজ থামিয়ে দিয়ে বলবেন, ‘আমার সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে, এখন আর অপারেশন করতে পারব না!’
ডয়চে ভেলে