০৯:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকায় মার্কিন দূতের সঙ্গে যা ঘটেছে তা প্রত্যাশিত: রুশ মুখপাত্র মারিয়া

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ১৫৯৬ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কঠোর সমালোচনা করেছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ঢাকায় সাম্প্রতিক ঘটনাকে নাগরিক অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখার অজুহাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন কূটনীতিকের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার ফল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

রাজধানী ঢাকার শাহীনবাগের ঘটনা উল্লেখ করে রুশ মুখপাত্র বলেছেন, ওই ঘটনা ‘প্রত্যাশিত’।

গত ২২ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। তিনদিন পর ওই বিবৃতির কথা রোববার ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

রুশ মূখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে যুকাতরাষ্ট্র ছাড়াও বাংলাদেশে ব্রিটিশ ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনেরও সমালোচনা করা হয়। রুশ মুখপাত্র বলেছেন, ব্রিটিশ ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতরাও বাংলাদেশ সরকারকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার শাহীনবাগে প্রায় এক দশক ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নেন। তারা পিটার হাসকে ঘিরে ধরে একটি স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করেন। রাষ্ট্রদূত সেটি না নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

ওই ঘটনার পরে ঢাকায় নিজ দেশের দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারম্যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় নিজেদের দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ জানান বলেও এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস।

বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয়গুলো নিয়েও বলা হয়েছে মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মৌলিক নীতির লঙ্ঘন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

শাহীনবাগের ওই ঘটনার উল্লেখ করে রুশ মুখপাত্র মারিয়া বলেন, এই ঘটনাটি মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার একটি প্রত্যাশিত ফলাফল; যিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের প্রতি যত্নবান হওয়ার অজুহাতে ক্রমাগতভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। ব্রিটিশ এবং জার্মান রাষ্ট্রদূতেরাও একই ধরনের কাজে সম্পৃক্ত এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খোলাখুলি সুপারিশ দিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২০ ডিসেম্বর রাতে একটি বিবৃতি দেয় ঢাকাস্থ রাশিয়ার দূতাবাস। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যারা নিজেদের বিশ্বের শাসক বলে মনে করে, তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। কিন্তু রাশিয়া এসব করে না।’

এদিকে বিবৃতিটির জবাবে পরদিন ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক টুইটে প্রশ্ন তুলে বলে, ‘জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসরণ করে রাশিয়া অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর থাকার বিষয়টি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছিল কি না।’

অন্যদিকে মার্কিন দূতাবাসের টুইটের জবাবে পাল্টা টুইট করে ঢাকাস্থ রাশিয়ার দূতাবাস। ওই টুইটে রাশিয়া দূতাবাস একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে।

চিত্রটিতে রাশিয়ার দৃষ্টিতে পশ্চিমাদের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতি কেমন চলছে, তা তুলে ধরা হয়। সেখানে এক পাশে দেয়া হয় পাখির ছবি, তার বিপরীতে ওপর থেকে আছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যে পশ্চিমা বলয়ের নেতৃত্বে রয়েছে, তা স্পষ্ট ওই ব্যঙ্গচিত্রে।

‘কূটনীতিক, দায়মুক্তি দূতাবাস, নিরাপত্তা’- এসব ক্ষেত্রে রাশিয়া সবসময় আন্তর্জাতিক আইন, ভিয়েনা কনভেনশনকে অনুসরণ করার তাগিদ দেয় বলে উল্লেখ করেন রুশ মুখপাত্র।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোকে শুধুমাত্র নিজেদের কথা না ভেবে অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলার অনুরোধ জানান রাশিয়ার মুখপাত্র। তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা) দেখতে বা শুনতে চায় না যে দূতাবাস, কনস্যুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে বা তারা হুমকি পাচ্ছেন। তারা এ বিষয়ে কোনো খেয়ালই করে না। সর্বোপরি, তারা নীরব থাকে। এর মাধ্যমে যারা এসব (সন্ত্রাসী কার্যক্রম) করে, তাদের ন্যায্যতা দেয়।

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ঢাকায় মার্কিন দূতের সঙ্গে যা ঘটেছে তা প্রত্যাশিত: রুশ মুখপাত্র মারিয়া

আপডেট সময় : ০৪:৫২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

এবার বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কঠোর সমালোচনা করেছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ঢাকায় সাম্প্রতিক ঘটনাকে নাগরিক অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখার অজুহাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন কূটনীতিকের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার ফল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

রাজধানী ঢাকার শাহীনবাগের ঘটনা উল্লেখ করে রুশ মুখপাত্র বলেছেন, ওই ঘটনা ‘প্রত্যাশিত’।

গত ২২ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। তিনদিন পর ওই বিবৃতির কথা রোববার ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

রুশ মূখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে যুকাতরাষ্ট্র ছাড়াও বাংলাদেশে ব্রিটিশ ও জার্মান কূটনৈতিক মিশনেরও সমালোচনা করা হয়। রুশ মুখপাত্র বলেছেন, ব্রিটিশ ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতরাও বাংলাদেশ সরকারকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার শাহীনবাগে প্রায় এক দশক ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে অবস্থান নেন। তারা পিটার হাসকে ঘিরে ধরে একটি স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করেন। রাষ্ট্রদূত সেটি না নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

ওই ঘটনার পরে ঢাকায় নিজ দেশের দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারম্যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় নিজেদের দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ জানান বলেও এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস।

বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয়গুলো নিয়েও বলা হয়েছে মারিয়া জাখারোভার বিবৃতিতে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মৌলিক নীতির লঙ্ঘন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

শাহীনবাগের ওই ঘটনার উল্লেখ করে রুশ মুখপাত্র মারিয়া বলেন, এই ঘটনাটি মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার একটি প্রত্যাশিত ফলাফল; যিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের প্রতি যত্নবান হওয়ার অজুহাতে ক্রমাগতভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। ব্রিটিশ এবং জার্মান রাষ্ট্রদূতেরাও একই ধরনের কাজে সম্পৃক্ত এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খোলাখুলি সুপারিশ দিয়ে যাচ্ছেন।

গত ২০ ডিসেম্বর রাতে একটি বিবৃতি দেয় ঢাকাস্থ রাশিয়ার দূতাবাস। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যারা নিজেদের বিশ্বের শাসক বলে মনে করে, তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। কিন্তু রাশিয়া এসব করে না।’

এদিকে বিবৃতিটির জবাবে পরদিন ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক টুইটে প্রশ্ন তুলে বলে, ‘জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসরণ করে রাশিয়া অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর থাকার বিষয়টি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছিল কি না।’

অন্যদিকে মার্কিন দূতাবাসের টুইটের জবাবে পাল্টা টুইট করে ঢাকাস্থ রাশিয়ার দূতাবাস। ওই টুইটে রাশিয়া দূতাবাস একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে।

চিত্রটিতে রাশিয়ার দৃষ্টিতে পশ্চিমাদের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতি কেমন চলছে, তা তুলে ধরা হয়। সেখানে এক পাশে দেয়া হয় পাখির ছবি, তার বিপরীতে ওপর থেকে আছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যে পশ্চিমা বলয়ের নেতৃত্বে রয়েছে, তা স্পষ্ট ওই ব্যঙ্গচিত্রে।

‘কূটনীতিক, দায়মুক্তি দূতাবাস, নিরাপত্তা’- এসব ক্ষেত্রে রাশিয়া সবসময় আন্তর্জাতিক আইন, ভিয়েনা কনভেনশনকে অনুসরণ করার তাগিদ দেয় বলে উল্লেখ করেন রুশ মুখপাত্র।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোকে শুধুমাত্র নিজেদের কথা না ভেবে অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলার অনুরোধ জানান রাশিয়ার মুখপাত্র। তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা) দেখতে বা শুনতে চায় না যে দূতাবাস, কনস্যুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে বা তারা হুমকি পাচ্ছেন। তারা এ বিষয়ে কোনো খেয়ালই করে না। সর্বোপরি, তারা নীরব থাকে। এর মাধ্যমে যারা এসব (সন্ত্রাসী কার্যক্রম) করে, তাদের ন্যায্যতা দেয়।