দ্রব্যমূল্য কমানোর ঘোষণা থাকলেও রূপরেখা নেই বাজেটে
- আপডেট সময় : ০৪:২৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪
- / ১৬৬৮ বার পড়া হয়েছে
খাতা কলমে ৯ শতাংশ হলেও বাস্তবে ডবল ডিজিটে থাকা মুল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও এক তৃতীয়াংশ ঘাটতি পুরণ, বড় অংকের রাজস্ব আয়ের অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে ঘোষণা করা বাজেটকে ‘কাগুজে বাঘ’ হিসেবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের দাবি, নিত্যপণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা থাকলেও তার রূপরেখা নেই বাজেটে। আগের নেয়া ঋণের কিস্তি শোধ করার বছরে নতুন ঋণের আশা দেখালেও তা বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা।
এমএ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকায় ৩০ বছর ধরে ভ্রাম্যমান দোকানে পান সিগারেট বিক্রি করেন মফিজুল ইসলাম। ৫০ পয়সার পান ৫ টাকা ১ টাকার সিগারেট ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এখন। সারাদিন দোকানদারি করে চাল ডাল আর সবজি কিনতে তখনকার চেয়ে এখন আরো বেশি হাপিয়ে ওঠেন তিনি।
কাজিরদেউরী বাজারের সামনে ফলমুল বিক্রি করেন মুজিবুর রহমান। দিনশেষে যা আয় করেন বাজারে গিয়ে তার সবটায় ফুরিয়ে যায় সংসারের চাহিদা মেটাতে। দিন যত যাচ্ছে ততই কঠিন হচ্ছে আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের সমন্বয় ঘটানো।
ভ্যাট, ট্যাক্স, আয়কর, শুল্ক, মুদ্রাস্ফীতি, মুল্যস্ফীতি, আমদানী, রপ্তানী, রেমিটেন্স, প্রনোদোনার মতো জাতীয় বাজেটের জটিল কঠিন হিসেব নিকেশ কিছুই জানা নেই মফিজুল কিংবা মজিবুরের। তাদের কাছে বাজেট মানে নিত্য পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়ার শঙ্কা। বাজারের থলে আরেকটু ছোট হবার ভয়।
নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়ছে। যার কিতাবি নাম মুল্যস্ফীতি। আগের বছরের চেয়ে প্রতিটি পণ্যে গড়মুল্য ১০ শতাংশের ওপরে আসছে বছর তা ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু কিভাবে এই অলিক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন তার রূপরেখা নেই বাজেটে।
ধান, চাল, গম, আটা, ময়দাসহ নিত্যপণ্যের ৩০টি আইটেমের ওপর উৎসকর অর্ধেকে নামিয়ে আনলেও, দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনায় তার সুফল সাধারণ মানুষ পাবে কিনা তা জানতে আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
বিদায়ী অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ বেসরকারী বিনিয়োগ আসছে বছরে ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ হবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু বেসরকারী খাতে ঋণের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশ করার ঘোষণা তার। যা পরস্পরবিরোধি বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটের বছরে আগের নেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি। এই টাকার যোগান কোত্থেকে আসবে সে ব্যাখ্যাও নেই প্রস্তাবিত বাজেটে। কালো টাকা সাদা কিংবা পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেয়া হলেও অতীত অভিজ্ঞতা বলছে এই সুযোগের সুফল কখনোই পায়নি অর্থনীতি।