ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা
- আপডেট সময় : ০১:২৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০২২
- / ১৭০০ বার পড়া হয়েছে
আজ ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ শোক ও স্মৃতির স্মরণে কোরআনখানি, দোয়া ও মাহফিলসহ তাজিয়া মিছিল করে শিয়া সম্প্রদায়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে তাজিয়া মিছিলসহ দিনভর নানান আনুষ্ঠানিকতা অনুষ্ঠিত হয়েছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে।সকালে শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে নগরীর সদরঘাট থেকে বের করা হয় শোক রেলী। এতে প্রতীকি কফিন, শোকাবহ পতাকা বহনের পাশাপাশি হায় হোসাইন, হায় হোসাইন রবে বুক চাপরে মাতম করে রেলীতে অংশগ্রহণকারীরা।
রাজশাহীতে পালিত হয়েছে পবিত্র আশুরা। শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন দিনটি পালনে তাজিয়া মিছিল করে।সকালে নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকা থেকে দরবারে খাতুনে মা জান্নাত তরিকায়ে নকশা বন্দী শোক মিছিল করে। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষন করে। এছাড়াও নগরীর শিয়া মসজিদের সামনে থেকে আরেকটি তাজিয়া মিছিল বের করা হয়।
খুলনায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা পালন করেছে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা। সকালে হযরত ইমাম হোসাইনের (আ.) পবিত্র শাহাদৎ স্মরণে শোক মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ইমামবাড়িতে গিয়ে শেষ হয়।
পাবনায় আশুরার শোক মিছিল অনুষ্টিত হয়েছে। সকালে আঞ্জুমান-ই-ক্বাদেরীয়া চর-গোবিন্দপুর আয়োজনে ইমাম হুসাইন (আ:) মসজিদের সামনে থেকে শোক মিছিল বের হয়।
যশোরেও তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। দানবীর হাজী মো. মহসিন ইমামবাড়ি কার্যকরি পরিষদের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও ইনকিলাব মেহেদি মিশন যশোর শাখার সভাপতি সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে বেলা ১১টায় যশোর ঈদগাহ থেকে বের হয় এ তাজিয়া মিছিল।
বিকেলে তাজিয়া মিছিলটি বের হয়ে মানিকগঞ্জ সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে এসে শেষ হয়।
নড়াইলে আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।দুপুরে নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর মিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে তাজিয়া মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিজয়পুর কারবালা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
আজ ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদা এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিনটি। হিজরি ৬১ সনের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন কারবালার ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদত বরণ করেন। এই শোক ও স্মৃতির স্মরণে কোরআনখানি, দোয়া ও মাহফিলসহ তাজিয়া মিছিল করে শিয়া সম্প্রদায়। বুক চাপড়িয়ে ‘হায় হোসেন’, ‘হায় হোসেন’ করে শোকের মাতম তোলেন তারা।
পবিত্র আশুরা…… দিনটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত শোকের। দিবসটি পালনে সকাল থেকেই পুরান ঢাকার ইমামবাড়ায় জড়ো হতে থাকে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।
সেখানে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যদিয়ে বের করা হয় তাজিয়া মিছিল।
বেশিরভাগেরই পরনে শোকের কালো পোশাক। পাশাপাশি হাতে কালো-লাল রঙের নিশান।
মিছিলে যোগ দিয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা বুক চাপড়িয়ে ‘হায় হোসেন’, ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে।
ইমাম হোসেনের ত্যাগের আদর্শকে ধারণ করতে এই আয়োজন বলে জানান তারা।
আশুরা পালনে সার্বিক সহয়তা করায় আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় উৎযাপন কমিটি।
শোক মিছিলটি চকবাজার, লালবাগ, আজিমপুর, নিউ মার্কেট হয়ে জিগাতলা গিয়ে শেষ হয়।
কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার স্মরণে দিনটি বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকরূপে দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে।
এ উপলক্ষে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে সকালে শুরু হয়েছে তাজিয়া মিছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মিছিল আজিমপুর, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, সাইন্সল্যাব, জিগাতলা হয়ে ধানমন্ডি ২ নম্বরে গিয়ে শেষ হবে। হোসেনি দালান ছাড়াও মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগ, ফরাশগঞ্জ, পল্টন, মগবাজার থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হয়। সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ ও রেব। মহিমান্বিত দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।