নগদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না : হাইকোর্ট
- আপডেট সময় : ০৫:৫৮:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২
- / ১৭১৮ বার পড়া হয়েছে
মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদের লাইসেন্সের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা কেন বাতিল করা হবে না, জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ রুল দেন।
নগদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম ও লাইসেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৭ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। তারা হলেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ও মো. হাসান উজ জামান।
তাদের পক্ষে আদালতে রিটের শুনানি করেন আইনজীবী কামাল হোসেন মিঞাজি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
শুনানির পর আদালত রুল জারি করেন। মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাময়িক লাইসেন্স নেওয়ার পর ২০১৯ সাল থেকে অননুমোদিত ও বেআইনিভাবে নগদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম ‘মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) ২০১৮ ও ২০২২’-এর প্রবিধান অনুসারে কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস), ২০২২ প্রবিধান লঙ্ঘন করে ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় নগদের সাময়িক নিবন্ধন কেন বাতিল করা হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক ও নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার, দ্য নিউ এজ ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের পর আইনজীবী মিঞাজি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস প্রভাইডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করে ২০১৯ সালে। তার আগে এই সেবাটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি প্রবিধান করা হয়। মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস রেগুলেশন, ২০১৮ নামে প্রবিধানটা করা হয়। সে প্রবিধানে বলা হয়, এই আর্থিক সেবা দিতে হলে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের সহযোগী সত্তা হতে হবে। কিন্তু লাইসেন্স নেওয়ার সময় বা পরে নগদ কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের সহযোগী ছিল না। ২০১৮ সালের প্রবিধানটা সংশোধন ও যুগোপযোগী করা হয় চলতি বছর। সংশোধিত প্রবিধানে বলা হয়েছে, আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে শুধু ব্যাংক না, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সহযোগী হলেও চলবে। কিন্তু নগদ এখন পর্যন্ত কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সহযোগী না। ’
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সহযোগী হিসেবে বাজারে নগদের পরিচিতির বিষয়ে এ আইনজীবী বলেন, ‘নগদ ডাক বিভাগের কোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান নয়। জয়েন স্টক কম্পানি থেকে নগদের কম্পানি ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে আমরা আদালতকে দেখিয়েছি, নগদে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ১ শতাংশও অংশীদারত্বও নেই।
কিন্তু প্রবিধান অনুযায়ী আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫১ শতাংশ অংশীদারত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
এদিকে নগদ বলছে, ‘আমরা নিশ্চিত করে বলছি যে, ডাক বিভাগের সঙ্গে নগদ-এর পরিষ্কার চুক্তি আছে। যে চুক্তির সুবাদে প্রতিবছর নগদ তার রেভিনিউ থেকে ৫১ শতাংশ নিয়মিত ভিত্তিতে ডাক বিভাগকে দিয়ে আসছে। ঘটনাচক্রে আজই (২ নভেম্বর) ডাক ভবনে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের কাছে ২০২১-২২ অর্থবছরের রেভিনিউয়ের ৫১ শতাংশ, সাড়ে চার কোটি টাকা হস্তান্তর করা হচ্ছে। এর আগের অর্থবছরে নগদ তিন কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং তার আগের অর্থ বছরে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ডাক বিভাগকে রেভিনিউ শেয়ার করা হয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, ডাক বিভাগ ও নগদের মধ্যে পরিষ্কার সম্পর্ক বিদ্যমান।