বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা
- আপডেট সময় : ০১:২৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
- / ১৫৪৭ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, টাংগাইল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দীর্ঘদিন বানের পানিতে ঘড়বাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির অভাব। ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
কুড়িগ্রামে ধীর গতিতে নদ-নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় দুর্ভোগ কমেনি বানভাসীদের। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে আছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে মানবেতর জীবন-যাপন করছে প্রায় ২ লাখ মানুষ। এদিকে রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকায় তিস্তার ভাঙ্গন তীব্র হয়ে উঠেছে। গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও তা এখনো বিপদসীমার উপর রয়েছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানি সংকট । ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
সিরাজগঞ্জে দুইদিন ধরে ধীরগতিতে কমছে যমুনার পানি। গত ২৪ ঘন্টায় শহররক্ষা বাঁধের হার্ডপয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং একই সময়ে উত্তরে কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা নতুন করে ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত পার করছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা কবলিতদের জন্য ২৬৭ মেট্রিক টন চাল ও ৩ হাজার ৯৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ৮৩ সেমি উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। আর বেড়েছে ঝিনাই, ধলেশ্বরী ও বংশাই নদীর পানি। বাসাইল, ভূঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, দেলদুয়ার ও নাগরপুরের এক লাখেরও বেশি মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। এসব এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর টানা ভারী বর্ষণে জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় ৫২ টি ইউনিয়নের প্রায় সারে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় পানিতে ডুবে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্য হয়েছে।মানিকগঞ্জে যমুনা নদীর পানি গেল ২৪ ঘন্টায় পানি বাড়েনি। তবে জেলার সব অভ্যন্তরীন নদ নদীর পানি বৃদ্বি পেয়ে প্রতিদিনই নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর পানি বাড়ায় মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী, চরজানাজাত, বন্দরখোলা, মাদবরেরচর ও সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের প্রায় আট হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ফরিদপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি আরো ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এদিকে, শহররক্ষাবাধের একটি অংশ ভেঙ্গে বন্যার পানি শহরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
কুষ্টিয়ার পদ্মা ও গড়াই নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ও তার শাখা গড়াই নদীর পানি বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।নদী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও যেসব জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে মেরামতের কাজ চলছে। পাবনায় শনিবার সকালে যমুনা নদীর পানি নগরবাড়ি পয়েন্টে বিপদ সীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পানি পাকশীতে বিপদ সীমার মাত্র ৯২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর এতে করে তলিয়ে গেছে নদী র্তীরবর্তী এলাকা গুলো। দূর্ভোগে পরেছে চরঅঞ্চলের মানুষ।
টানা বৃষ্টিতে বাড়তে শুরু করেছে দিনাজপুরের ১৯টি নদীর পানি।এরি মধ্যে জেলার প্রধান তিনটি নদী পূনর্ভবা,আত্রাই ,করতোয়া ও ছোট যমুনার পানি আশংকজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।ফলে আবারো বন্যার আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। উত্তরঞ্চলের বন্যার পানি নেমে আসায় নদনদীর পানি বেডে যাওয়া শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই ৩ উপজেলায় অন্তত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।