০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বিজেপি দপ্তরে কর্মী বিক্ষোভ কি অশনি সঙ্কেত?

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১২:৩৪:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১৮২৭ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিজেপির রাজ্য দপ্তরে নজিরবিহীন বিক্ষোভ দলীয় কর্মীদের৷ লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনায় অস্বস্তি গেরুয়া শিবিরে৷

পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দল যখন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে চলেছে, সেই সময় অন্দরের ক্ষোভ বিস্ফোরণের আকার নিল৷

দপ্তরে বিক্ষোভ

গত বুধবার বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তাণ্ডব চালান সল্টলেকে দলীয় সদর দপ্তরে৷ বাঁশ ও ইট দিয়ে মূল ফটকের তালা ভাঙেন তারা৷ কেউ কেউ গেট ও পাঁচিল টপকে অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন৷

বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষকে অবিলম্বে পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন বিক্ষুব্ধরা৷ কয়েকজন বিক্ষোভকারী অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে থাকা বিজেপি কর্মীরা বাধা দিলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়৷ বিক্ষুব্ধদের মারধরে আহত হন এক বিজেপি কর্মী৷

এমন বিক্ষোভে হতচকিত বিজেপি দপ্তরের নিরাপত্তারক্ষীরা দোতলায় ওঠার গেট বন্ধ করে দেন৷ রাত পর্যন্ত দপ্তরের সামনে ধরনায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা৷ নেতাদের কুশপুতুল পোড়ানো হয়৷

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘‘রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ঠান্ডা ঘরে বসে পার্টি চালাচ্ছেন৷ গোষ্ঠী রাজনীতি করছেন৷ টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রি করছেন৷” কেন্দ্রীয় নেতা ও তথ্যপ্রযুক্তি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিত মালব্য, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও তাদের নিশানায় ছিলেন৷

একদিনেই এই বিক্ষোভ শেষ হয়নি৷ বিজেপির সাবেক রাজ্য দপ্তর মুরলীধর সেন লেনের বাইরেও বিক্ষোভ হয় পরের দিন, বৃহস্পতিবার৷ প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা স্লোগান দেন৷ নেতৃত্বের কুশপুতুল পোড়ানোর পাশাপাশি ছবিতে লাথি ও জুতো মারেন তারা৷ একইভাবে অমিতাভ, মালব্যদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়৷

ভিন্ন সুরে নেতৃত্ব

দলীয় কোন্দল বা বিরোধের কথা শোনা গেলেও এ ধরনের বিক্ষোভ নজিরবিহীন৷ এতে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে গেরুয়া শিবিরে৷ বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব‌্য, ‘‘আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব‌্য করব না৷ যারা সাংগঠনিক দায়িত্বে আছেন তারা বলবেন৷ তবে এই ধরনের ঘটনা কাম‌্য নয়৷”

বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যেই ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে৷ বিক্ষুব্ধদের নিশানায় থাকা সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘দল বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবে না৷ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ প্রয়োজনে বহিষ্কার করা হবে৷”

সাবেক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিক্ষোভের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুললেও বলেন, ‘‘অনেক নেতা-কর্মীর মধ্যে ক্ষোভ আছে৷ তাদের কথা শোনার কেউ নেই৷”

বিক্ষুব্ধদের সাজার বিধান নিয়ে তার মন্তব্য, ‘‘শাস্তি কোনো সমাধান নয়৷ ওদের ডেকে কথা বলা উচিত৷”

তৃণমূলের হাত?

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এর পিছনে তৃণমূলের হাত দেখছেন৷ তার মন্তব্য, ‘‘কারা বাসে করে সল্টলেক ও মুরলীধর সেন লেনে লোকজন পাঠিয়েছে, তা আমরা জানি৷ এ সব করে লাভ নেই৷ বিজেপির কোনো সমস্যা হবে না৷”

এর পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু সব জায়গায় তৃণমূলকে দেখছেন৷ আমাদের কাছে তো খবর, শুভেন্দুই লোক পাঠিয়ে করাচ্ছেন৷ শুভেন্দু রাজ্য বিজেপিকে দখল করতে চাইছেন, তার লক্ষ্য সুকান্তকে সরিয়ে সভাপতি হওয়া৷”

বিজেপি নেতা, অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দের দাবি, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বক্তব্য থাকতেই পারে, কিন্তু যারা দলের পতাকা পায়ের নীচে ফেলেছেন, তারা বিজেপির কর্মী হতে পারেন না৷”

বিক্ষোভের প্রভাব

বামেদের মতো বিজেপিও রেজিমেন্টেড দল৷ সেখানে এ ধরনের বিক্ষোভ বেমানান৷ প্রবীণ সংবাদিক দেবাশিস দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পুরনোদের সঙ্গে নতুন যোগ দেয়া কর্মীদের দ্বন্দ্ব আছে বিজেপিতে৷ আদি বিজেপি কর্মীরা কল্কে পাচ্ছেন না, নতুনরা বেশি গুরুত্ব পেলে ক্ষোভ জন্মাবেই৷”

লোকসভা নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়তে পারে? দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘যে বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরির কথা ছিল, তা অধিকাংশ জেলায় বিজেপি করতে পারেনি৷ অমিত শাহ বলেছিলেন ৩৫টি আসন পশ্চিমবঙ্গ থেকে চাই৷ এ ধরনের বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে এই রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছবে না৷”

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বিজেপি দপ্তরে কর্মী বিক্ষোভ কি অশনি সঙ্কেত?

আপডেট সময় : ১২:৩৪:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

বিজেপির রাজ্য দপ্তরে নজিরবিহীন বিক্ষোভ দলীয় কর্মীদের৷ লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনায় অস্বস্তি গেরুয়া শিবিরে৷

পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দল যখন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে চলেছে, সেই সময় অন্দরের ক্ষোভ বিস্ফোরণের আকার নিল৷

দপ্তরে বিক্ষোভ

গত বুধবার বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তাণ্ডব চালান সল্টলেকে দলীয় সদর দপ্তরে৷ বাঁশ ও ইট দিয়ে মূল ফটকের তালা ভাঙেন তারা৷ কেউ কেউ গেট ও পাঁচিল টপকে অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন৷

বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষকে অবিলম্বে পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন বিক্ষুব্ধরা৷ কয়েকজন বিক্ষোভকারী অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে থাকা বিজেপি কর্মীরা বাধা দিলে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়৷ বিক্ষুব্ধদের মারধরে আহত হন এক বিজেপি কর্মী৷

এমন বিক্ষোভে হতচকিত বিজেপি দপ্তরের নিরাপত্তারক্ষীরা দোতলায় ওঠার গেট বন্ধ করে দেন৷ রাত পর্যন্ত দপ্তরের সামনে ধরনায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা৷ নেতাদের কুশপুতুল পোড়ানো হয়৷

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘‘রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ঠান্ডা ঘরে বসে পার্টি চালাচ্ছেন৷ গোষ্ঠী রাজনীতি করছেন৷ টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রি করছেন৷” কেন্দ্রীয় নেতা ও তথ্যপ্রযুক্তি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিত মালব্য, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও তাদের নিশানায় ছিলেন৷

একদিনেই এই বিক্ষোভ শেষ হয়নি৷ বিজেপির সাবেক রাজ্য দপ্তর মুরলীধর সেন লেনের বাইরেও বিক্ষোভ হয় পরের দিন, বৃহস্পতিবার৷ প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা স্লোগান দেন৷ নেতৃত্বের কুশপুতুল পোড়ানোর পাশাপাশি ছবিতে লাথি ও জুতো মারেন তারা৷ একইভাবে অমিতাভ, মালব্যদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা হয়৷

ভিন্ন সুরে নেতৃত্ব

দলীয় কোন্দল বা বিরোধের কথা শোনা গেলেও এ ধরনের বিক্ষোভ নজিরবিহীন৷ এতে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে গেরুয়া শিবিরে৷ বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব‌্য, ‘‘আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব‌্য করব না৷ যারা সাংগঠনিক দায়িত্বে আছেন তারা বলবেন৷ তবে এই ধরনের ঘটনা কাম‌্য নয়৷”

বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যেই ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে৷ বিক্ষুব্ধদের নিশানায় থাকা সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘দল বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবে না৷ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ প্রয়োজনে বহিষ্কার করা হবে৷”

সাবেক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিক্ষোভের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুললেও বলেন, ‘‘অনেক নেতা-কর্মীর মধ্যে ক্ষোভ আছে৷ তাদের কথা শোনার কেউ নেই৷”

বিক্ষুব্ধদের সাজার বিধান নিয়ে তার মন্তব্য, ‘‘শাস্তি কোনো সমাধান নয়৷ ওদের ডেকে কথা বলা উচিত৷”

তৃণমূলের হাত?

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এর পিছনে তৃণমূলের হাত দেখছেন৷ তার মন্তব্য, ‘‘কারা বাসে করে সল্টলেক ও মুরলীধর সেন লেনে লোকজন পাঠিয়েছে, তা আমরা জানি৷ এ সব করে লাভ নেই৷ বিজেপির কোনো সমস্যা হবে না৷”

এর পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দু সব জায়গায় তৃণমূলকে দেখছেন৷ আমাদের কাছে তো খবর, শুভেন্দুই লোক পাঠিয়ে করাচ্ছেন৷ শুভেন্দু রাজ্য বিজেপিকে দখল করতে চাইছেন, তার লক্ষ্য সুকান্তকে সরিয়ে সভাপতি হওয়া৷”

বিজেপি নেতা, অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দের দাবি, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বক্তব্য থাকতেই পারে, কিন্তু যারা দলের পতাকা পায়ের নীচে ফেলেছেন, তারা বিজেপির কর্মী হতে পারেন না৷”

বিক্ষোভের প্রভাব

বামেদের মতো বিজেপিও রেজিমেন্টেড দল৷ সেখানে এ ধরনের বিক্ষোভ বেমানান৷ প্রবীণ সংবাদিক দেবাশিস দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পুরনোদের সঙ্গে নতুন যোগ দেয়া কর্মীদের দ্বন্দ্ব আছে বিজেপিতে৷ আদি বিজেপি কর্মীরা কল্কে পাচ্ছেন না, নতুনরা বেশি গুরুত্ব পেলে ক্ষোভ জন্মাবেই৷”

লোকসভা নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়তে পারে? দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘যে বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরির কথা ছিল, তা অধিকাংশ জেলায় বিজেপি করতে পারেনি৷ অমিত শাহ বলেছিলেন ৩৫টি আসন পশ্চিমবঙ্গ থেকে চাই৷ এ ধরনের বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে এই রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছবে না৷”

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ