রেকর্ড মজুদের পরও দেশে চাল সংকট ও উচ্চমূল্যের জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা
- আপডেট সময় : ০৮:০১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
- / ১৫৫৪ বার পড়া হয়েছে
সরকারের খাদ্যগুদামে রেকর্ড পরিমাণ মজুদ থাকার পরও দেশে চাল সংকট ও উচ্চমূল্যের জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, অসাধু চক্রের কারসাজিতে চালের সংকট তৈরি হচ্ছে। তবে চালের চাহিদা ও উৎপাদন পরিস্থিতি নিয়ে কে সত্য, আর কে মিথ্যা বলছে এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আবার কৃষকরাও বলছেন, ঠিকমতো ভর্তুকি না পাওয়ায় তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এদিকে কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকার চালের বাড়তি উৎপাদন নিয়ে যে তথ্য দিচ্ছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়।
একাত্তুরের স্বাধীনতা পরবর্তীকালে গত ৫০ বছরে দেশে প্রায় তিন গুণ বেড়েছে চালের উৎপাদন। ২৫ কোটি মানুষের দেশ– ইন্দোনেশিয়াকে টপকে কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে রয়েছে তৃতীয় স্থানে। বিশ্বজুড়ে চালের উৎপাদন ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমলেও, বাংলাদেশে তা ৩ শতাংশ বেড়েছে বলে দাবি কৃষি বিভাগের। তার পরেও চলছে চাল সংকট।
গত এক দশকে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ৫ শতাংশ কমে, শিল্প খাতের অবদান বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। কৃষি খাতের মূল বিষয় হলো জমি। বাংলাদেশে প্রতিবছর চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে ১ শতাংশ হারে। এদিকে সরকারের দেয়া কৃষি ভর্তুকিকে অপ্রতুল বলে জানান সাধারণ কৃষকরা।
সারাদেশে চালের বাজার নিয়ে চলছে চরম অস্থিরতা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কতিপয় অসাধু চালকল মালিকের সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। আর চালকল মালিকদের দাবি, তারা চাহিদামতো ধান না পাওয়ায় বেড়েছে দাম।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সারাদেশে প্রায় ২২ হাজারের বেশি ছোট-বড় চালকল রয়েছে। সরকারি হিসেবে দেশে চালের বার্ষিক চাহিদা ২ কোটি ৫৮ লাখ টন। আর চালের উৎপাদন হচ্ছে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টন। তাহলে কোথায় যাচ্ছে উদ্বৃত্ত সোয়া কোটি টন চাল?
চালের সবচে’ বড় রপ্তানীকারক থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে সব ধরনের চালের দাম গত এক বছরে কমেছে ১৫ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশে এ সময়ে চালভেদে দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ দাবি করা হলেও দেশের পরিসংখ্যান সঠিক নয় বলে মনে করেন কৃষি অর্থনীতিবিদরাই।
চালের প্রকৃত চাহিদা ও প্রকৃত উৎপাদন চিত্রের বিশ্বাসযোগ্য পরিসংখ্যান ছাড়া চালের বাজারে শৃংখলা ফিরবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।