শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে : সুপ্রিম কোর্ট
- আপডেট সময় : ০২:০২:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২
- / ১৫৬০ বার পড়া হয়েছে
শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও তার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, দেশটিতে পার্লামেন্টে আজ বসছে বিশেষ অধিবেশন।
দুই ভাইয়ের দেশ না ছাড়ার আদেশ ২৮ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সুরিয়ার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিশেষ সংসদ অধিবেশনকে ঘিরে পার্লামেন্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। পার্লামেন্টের আশপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং জনসাধারণকে বিকল্প পথ ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় একটি সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সরকার গঠনে শুক্রবারও আইনপ্রণেতাদের তাগিদ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
আগামীর শ্রীলঙ্কার কী হবে, তা নিয়ে বড়োসড়ো প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়েছে।
কে রাষ্ট্রপতির স্থলাভিষিক্ত হবেন, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। ২০ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলেও সংকট কাটবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। শাসক দলের সমর্থনে এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে এগিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেই। তবে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে মানছেন না। স্থিতিশীলতার জন্য দেশটিতে নতুন করে সংসদ নির্বাচন প্রয়োজন হবে বলেও মত বিশ্লেষকদের। একটি সর্বদলীয় সরকার গঠিত হলে তাদের প্রধান কাজ হবে দেশটির অর্থনীতির শৃঙ্খলা ফেরানো।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি পঙ্গু করে ফেলেছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। জ্বালানি তেল আমদানীর জন্য মিলছে না ডলার। সেই সাথে মেগা প্রকল্পের জন্য করা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতায় ভেঙ্গে পড়েছে আর্থিক শৃঙ্খলা। করোনা পরিস্থিতি ওলোট-পালোট করে দিয়েছে পর্যটন-নির্ভর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাজাপাকসের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা সোযা ২ কোটি মানুষের দেশকে দেউলিয়া করে ছেড়েছে।
সর্বদলীয় সরকার গঠনের পর কোন পথে হাঁটবেন শাসকরা এখন সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তাদের প্রধান কাজ হবে দেশটির অর্থনীতির শৃঙ্খলা ফেরানো। দাতাদের সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করা এবং আর্থিক সহায়তার জন্য আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নেয়া।
পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে লঙ্কানবাসী পাবে নতুন প্রেসিডেন্ট। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ছাড়াও লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান বিরোধী দল এসজেবির নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। আরো আছেন ক্ষমতাসীন এসএলপিপির এমপি ও সাবেক সাংবাদিক দুল্লাস আলাহাপেরুমা এবং সাবেক সেনাপ্রধান ও দেশটির প্রথম ফিল্ড মার্শাল শরৎ ফনসেকা। এ পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় সামনে কী ঘটতে পারে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। যদিও গুঞ্জন রয়েছে, বিদেশে বসেই রাজাপাকসে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করতে পারেন।
শ্রীলঙ্কা জুড়ে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ চলছে। গোতাবায়ের পদত্যাগ নি:সন্দেহে জনগণের বড় জয়। কলম্বোর পরিস্থিতি এখন কিছুটা শান্ত। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ারও অপেক্ষায় বিক্ষোভকারীরা।