১০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

সময় থাকতে দাবানল শনাক্ত করার অভিনব প্রযুক্তি

এস. এ টিভি
  • আপডেট সময় : ১১:৫৬:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১৫৯৬ বার পড়া হয়েছে
এস. এ টিভি সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চরম তাপপ্রবাহ জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছে৷ দাবানলের প্রকোপে অনেক জঙ্গলের বিশাল ক্ষতি হয়েছে৷ আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কিছু মানুষ এমন বিপর্যয় এড়ানোর ব্রত নিয়েছেন৷

প্রতি বছর দাবানলের কারণে লাখ লাখ হেক্টর জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যায়৷ সেইসঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনও ঘটে, যা বিশ্বব্যাপী সিওটু নির্গমনের প্রায় ২০ শতাংশের সমান৷ বিশাল মাত্রার পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয়৷ ড্রিয়াড নেটওয়ার্ক্সের কর্ণধার কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে, বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমি প্রথম বার টেলিভিশনের পর্দা, সংবাদমাধ্যমে অ্যামাজন অঞ্চল, অস্ট্রেলিয়ার বিশাল দাবানল দেখেছিলাম৷ ফ্রাইডেস ফর ফিউচার আন্দোলন পথে নেমেছিল, আমার নিজের মেয়েও তাতে শামিল হয়েছিল৷ সেই প্রাথমিক ধাক্কা খেয়ে মনে হয়েছিল, আমাকে কিছু একটা করতেই হবে৷”

যেমন ভাবনা, তেমন কাজ৷ বিজ্ঞানী, সফ্টওয়্যার ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের এক টিম গড়ে তুলে তিনি যতটা আগে সম্ভব দাবানল শনাক্ত করার লক্ষ্যে নতুন এক সিস্টেম সৃষ্টি করেন৷ গন্ধ টের পায় এমন বিশেষ সেন্সর আলট্রা আর্লি ডিটেকশন সম্ভব করে৷ এক অর্থে সেগুলি অত্যন্ত উন্নত যান্ত্রিক নাক৷

কৃষিবিজ্ঞানী হিসেবে ইয়ুর্গেন ম্যুলার অনেক বছর ধরে একই ধরনের সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন৷ এক পরীক্ষামূলক জঙ্গলে তিনি নতুন সেন্সরের কার্যকারিতা পরীক্ষা করছেন৷ তিন মিটার উচ্চতায় দক্ষিণ দিকে মুখ করে সৌরশক্তিচালিত সেন্সর বসানো আছে৷ অত্যন্ত কম আলো থাকলেও সেটি কাজ করে৷ ছায়ায় ঢাকা জঙ্গলে সেটা খুব জরুরি৷ কন্ডেন্সরের সাহায্যে সেই ‘ইন্টেলিজেন্ট নোজ’ এমনকি রাতে ও বৃষ্টির সময়েও কাজ করে৷কিন্তু ক্ষুদ্র সবুজ বস্তুটি ঠিক কীসের গন্ধ পায়? ফরেস্ট ইকোলজিস্ট ড. ইয়ুর্গেন ম্যুলার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বাতাসে নানা ধরনের উপাদান রয়েছে৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মোনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফেট এবং নোবেল গ্যাস৷ সেন্সর সে সব পরিমাপ করে৷ যে মুহূর্তে বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নেওয়া হয়, সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের মিশ্রণও স্বাভাবিকভাবে বদলে যায়৷ চলে যায়৷ পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ে নির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে দেয়৷ এই প্রণালী আদর্শভাবে কাজে লাগাতে হলে জঙ্গলজুড়ে একশো মিটার দূরত্বে একটি করে সেন্সর বসাতে হবে৷

নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি এক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্লাউড সার্ভারে তথ্য পাঠানো হয়৷ কাগজে কলমে সেই প্রযুক্তি ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ নামে পরিচিত হলেও কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে ভালোবেসে সেটির নাম রেখেছেন ‘ইন্টারনেট অফ ট্রিস’৷ কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে মনে করিয়ে দেন, ‘‘বিশ্বের বড় জঙ্গলগুলিতে সাধারণত টেলিকম কোম্পানিগুলির কোনো টাওয়ার থাকে না৷ অর্থাৎ ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল কোনো প্রযুক্তি সেখানে প্রয়োগের অর্থ নেই৷ আমাদের নিজেদের যোগাযোগের অবকাঠামোর প্রয়োজন৷ সেটি আবার সৌরশক্তিচালিত হতে হবে৷ তাছাড়া বড় এলাকা জুড়ে সেটা কার্যকর হতে হবে৷ এই মেশ-গেটওয়ের মাধ্যমে আমরা ঠিক সেটাই সম্ভব করেছি৷ এর মাধ্যমে আমরা জঙ্গলের মধ্যে দুই কিলোমিটার রেঞ্জে যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি৷ এবার ধাপে ধাপে জঙ্গলের আরো গভীরে প্রবেশ করবো৷”

ছোট ও বুদ্ধিমান যান্ত্রিক নাক লোকবল ছাড়াই অনেক কাজ করতে পারে৷ কাজও বেশ দ্রুত করে৷ ড. ইয়ুর্গেন ম্যুলার বলেন, ‘‘কনট্রোল রুমে সহকর্মীরা এই গন্ধ চিনতে পারেন নি৷ আমি পরীক্ষা চালালে কনট্রোল রুমে জানিয়ে দেই৷ তারপর কিছুটা ধূর্ত হয়ে প্রশ্ন করি, তোমরা কি আগুন দেখেছো? দেখো নি? অর্থাৎ অপটিকাল সিস্টেম তখনই ধোঁয়া চিন্তে পারে, যখন সেই ধোঁয়া গাছের মগডালের উপর উঠে যায়৷”

জঙ্গলের এই বুদ্ধিমান আত্মা কি আধুনিক যুগের রক্ষাকারী দেবদেবি হয়ে উঠবে?

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

এস. এ টিভি সমন্ধে

SATV (South Asian Television) is a privately owned ‘infotainment’ television channel in Bangladesh. It is the first ever station in Bangladesh using both HD and 3G Technology. The channel is owned by SA Group, one of the largest transportation and real estate groups of the country. SATV is the first channel to bring ‘Idol’ franchise in Bangladesh through Bangladeshi Idol.

যোগাযোগ

বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬,
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২,
বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০
ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪
ই-মেইল: info@satv.tv
ওয়েবসাইট: www.satv.tv

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০১৩-২০২৩। বাড়ী ৪৭, রাস্তা ১১৬, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ। ফোন: +৮৮ ০২ ৯৮৯৪৫০০, ফ্যাক্স: +৮৮ ০২ ৯৮৯৫২৩৪

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সময় থাকতে দাবানল শনাক্ত করার অভিনব প্রযুক্তি

আপডেট সময় : ১১:৫৬:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চরম তাপপ্রবাহ জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছে৷ দাবানলের প্রকোপে অনেক জঙ্গলের বিশাল ক্ষতি হয়েছে৷ আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কিছু মানুষ এমন বিপর্যয় এড়ানোর ব্রত নিয়েছেন৷

প্রতি বছর দাবানলের কারণে লাখ লাখ হেক্টর জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যায়৷ সেইসঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনও ঘটে, যা বিশ্বব্যাপী সিওটু নির্গমনের প্রায় ২০ শতাংশের সমান৷ বিশাল মাত্রার পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয়৷ ড্রিয়াড নেটওয়ার্ক্সের কর্ণধার কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে, বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমি প্রথম বার টেলিভিশনের পর্দা, সংবাদমাধ্যমে অ্যামাজন অঞ্চল, অস্ট্রেলিয়ার বিশাল দাবানল দেখেছিলাম৷ ফ্রাইডেস ফর ফিউচার আন্দোলন পথে নেমেছিল, আমার নিজের মেয়েও তাতে শামিল হয়েছিল৷ সেই প্রাথমিক ধাক্কা খেয়ে মনে হয়েছিল, আমাকে কিছু একটা করতেই হবে৷”

যেমন ভাবনা, তেমন কাজ৷ বিজ্ঞানী, সফ্টওয়্যার ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের এক টিম গড়ে তুলে তিনি যতটা আগে সম্ভব দাবানল শনাক্ত করার লক্ষ্যে নতুন এক সিস্টেম সৃষ্টি করেন৷ গন্ধ টের পায় এমন বিশেষ সেন্সর আলট্রা আর্লি ডিটেকশন সম্ভব করে৷ এক অর্থে সেগুলি অত্যন্ত উন্নত যান্ত্রিক নাক৷

কৃষিবিজ্ঞানী হিসেবে ইয়ুর্গেন ম্যুলার অনেক বছর ধরে একই ধরনের সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন৷ এক পরীক্ষামূলক জঙ্গলে তিনি নতুন সেন্সরের কার্যকারিতা পরীক্ষা করছেন৷ তিন মিটার উচ্চতায় দক্ষিণ দিকে মুখ করে সৌরশক্তিচালিত সেন্সর বসানো আছে৷ অত্যন্ত কম আলো থাকলেও সেটি কাজ করে৷ ছায়ায় ঢাকা জঙ্গলে সেটা খুব জরুরি৷ কন্ডেন্সরের সাহায্যে সেই ‘ইন্টেলিজেন্ট নোজ’ এমনকি রাতে ও বৃষ্টির সময়েও কাজ করে৷কিন্তু ক্ষুদ্র সবুজ বস্তুটি ঠিক কীসের গন্ধ পায়? ফরেস্ট ইকোলজিস্ট ড. ইয়ুর্গেন ম্যুলার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বাতাসে নানা ধরনের উপাদান রয়েছে৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন মোনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফেট এবং নোবেল গ্যাস৷ সেন্সর সে সব পরিমাপ করে৷ যে মুহূর্তে বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নেওয়া হয়, সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের মিশ্রণও স্বাভাবিকভাবে বদলে যায়৷ চলে যায়৷ পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ে নির্দিষ্ট অবস্থান জানিয়ে দেয়৷ এই প্রণালী আদর্শভাবে কাজে লাগাতে হলে জঙ্গলজুড়ে একশো মিটার দূরত্বে একটি করে সেন্সর বসাতে হবে৷

নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি এক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্লাউড সার্ভারে তথ্য পাঠানো হয়৷ কাগজে কলমে সেই প্রযুক্তি ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ নামে পরিচিত হলেও কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে ভালোবেসে সেটির নাম রেখেছেন ‘ইন্টারনেট অফ ট্রিস’৷ কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে মনে করিয়ে দেন, ‘‘বিশ্বের বড় জঙ্গলগুলিতে সাধারণত টেলিকম কোম্পানিগুলির কোনো টাওয়ার থাকে না৷ অর্থাৎ ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল কোনো প্রযুক্তি সেখানে প্রয়োগের অর্থ নেই৷ আমাদের নিজেদের যোগাযোগের অবকাঠামোর প্রয়োজন৷ সেটি আবার সৌরশক্তিচালিত হতে হবে৷ তাছাড়া বড় এলাকা জুড়ে সেটা কার্যকর হতে হবে৷ এই মেশ-গেটওয়ের মাধ্যমে আমরা ঠিক সেটাই সম্ভব করেছি৷ এর মাধ্যমে আমরা জঙ্গলের মধ্যে দুই কিলোমিটার রেঞ্জে যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি৷ এবার ধাপে ধাপে জঙ্গলের আরো গভীরে প্রবেশ করবো৷”

ছোট ও বুদ্ধিমান যান্ত্রিক নাক লোকবল ছাড়াই অনেক কাজ করতে পারে৷ কাজও বেশ দ্রুত করে৷ ড. ইয়ুর্গেন ম্যুলার বলেন, ‘‘কনট্রোল রুমে সহকর্মীরা এই গন্ধ চিনতে পারেন নি৷ আমি পরীক্ষা চালালে কনট্রোল রুমে জানিয়ে দেই৷ তারপর কিছুটা ধূর্ত হয়ে প্রশ্ন করি, তোমরা কি আগুন দেখেছো? দেখো নি? অর্থাৎ অপটিকাল সিস্টেম তখনই ধোঁয়া চিন্তে পারে, যখন সেই ধোঁয়া গাছের মগডালের উপর উঠে যায়৷”

জঙ্গলের এই বুদ্ধিমান আত্মা কি আধুনিক যুগের রক্ষাকারী দেবদেবি হয়ে উঠবে?

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ