সিলেটে বন্যার তান্ডবে দিশেহারা মানুষ
- আপডেট সময় : ০৮:১৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
- / ১৬২২ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিতে তলিয়ে গেলেও, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো আংশিক চালু করা হয়েছে। তবে, ভেঙ্গে পড়েছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। টেলিফোন যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। রানওয়েতে পানি ঢুকে পড়ায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে বন্ধ রয়েছে উড়োজাহাজ উঠা-নামা। পানি ঢোকায় আজ থেকে রেল স্টেশনও বন্ধ হয়ে গেছে। আশ্রয় কেন্দ্রে খাদ্য, পানি, ওষুধসহ নানা সংকটে পড়েছে বানভাসীরা।
এভাবে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি-ঘর।সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার তিলকপাড়া গ্রামের এই দৃশ্য জানান দিচ্ছে, বানভাসি মানুষ কত অসহায়।
সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর রুপ নিয়েছে। বন্যার তান্ডবে দিশেহারা মানুষ।
আসাম-মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢলে নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ঘর-বাড়ি,রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে প্লাবিত। ঘরে বুক সমান পানি থাকায় মাচায় আশ্রয় নিয়ে পাহারা দিচ্ছে অনেকে। ঘর-বাড়ির মায়া ত্যাগ করে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন, তারা রয়েছেন খাদ্য কষ্টে।
জেলার ১৩টি উপজেলায় বিদ্যুৎ নেই। বিশুদ্ধ পানীয় জল,খাদ্য,ঔষধ ও শিশু খাদ্যের সংকটে বানভাসী মানুষ সীমাহীন কষ্টে। সিলেটের বেশির ভাগ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র বন্ধ থাকায়, তিন লাখ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ নেই।
রানওয়ে ডুবে যাওয়ায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা দুই দিন ধরে বন্ধ। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নিচু এলাকায় বাসা-বাড়ির কোথাও কোথাও ৫-৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে।
বাসভাসীদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য শুক্রবার দুপুর থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীও। বানভাসিদের জন্য ২শ মেট্রিক টন চাল, ৩০ লাখ নগদ টাকা এবং ৮ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মহানগরীর সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন দুই দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে সে বৃষ্টির পানির ধারণ ক্ষমতা সিলেট অঞ্চলের নদ-নদীর নেই। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সদর উপজেলায় ৩৩টা আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসীরা ভিড় করছেন বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
আশ্রয় কেন্দ্র যথেষ্ট আছে। কিন্তু লোকজনকে নিয়ে আসার মত বাহন নাই বলে অসহায়ত্বের কথা জানান জেলা প্রশাসক।
লোকজনকে স্থানান্তর, আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো, খাদ্য ঔষধসহ সব ব্যবস্থা করবে সরকার বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
শিগগিরই এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে দেশ এমন প্রত্যাশা সকলের।